প্রকাশ :
২৪খবর বিডি: 'জ্বালানি ও পানি সহযোগিতা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে জয়েন্ট কনসালটেটিভ কমিশনের (জেসিসি) বৈঠকে আলোচনা করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এর আগে দুই দেশের মাঝে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন বৈঠকের ফলাফল নিয়েও আলোচনা হবে এবং দিক নির্দেশনা দেওয়ার চেষ্ট করা হবে। আগামী ১৯ জুন বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।'
'বুধবার (১৫ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) মাশফি বিনতে সামস বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে অনেকগুলো বৈঠক হয়েছে। ওইসব বৈঠকে যেসব বিষয় অমীমাংসিত বা আটকে রয়েছে, সেগুলো আলোচনার মাধ্যমে নিরসন করার চেষ্টা করবেন দুই মন্ত্রী।'
আঞ্চলিক ও ভূ-রাজনীতি নিয়েও দুই পক্ষ তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করবে বলে তিনি জানান।
'পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন ১৮ জুন দিল্লি যাচ্ছেন এবং ওইদিন কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি (সিআইআই) এর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। পরের দিন জয়শঙ্করের সঙ্গে জয়েন্ট কনসালটেটিভ কমিশনের বৈঠকে অংশ নেবেন। এর আগে ওই বৈঠকটি ৩০ মে হওয়ার কথা থাকলেও পরবর্তীকালে সেটি পিছিয়ে যায়।'
জ্বালানি সহযোগিতা
'জ্বালানি খাতে আঞ্চলিক সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটান অনেকদিন থেকে আলোচনা করে আসছে। গত এপ্রিলে জয়শঙ্করের ঢাকা সফরের সময়ে দিল্লির সমর্থনের বিষয়টি তিনি প্রকাশ্যে ব্যক্ত করেন। এ প্রেক্ষাপটে বিবিআইএন কাঠামোর অধীনে জ্বালানি নিরাপত্তা সহযোগিতা করতে আগ্রহী ঢাকা।'
'এ বিষয়ে মাশফি বিনতে সামস বলেন, ‘এ অঞ্চলের চারটি দেশের মধ্যে জ্বালানি, পানি, কানেক্টিভিটিসহ অন্যান্য সহযোগিতা নিয়ে ২০১৩ সালে ঢাকায় আলোচনা হয়েছে। আমরা এটিকে বেগবান করতে চাই।'
চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার
-২০১৯ সালে দুই দেশ সম্মত হয় যে, চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতের ব্যবসায়ীরা তদের কার্গো আনা-নেওয়া করতে পারবে। কিন্তু তিন বছরেও এটি চালু হয়নি।
-মাশফি বিনতে সামস বলেন, ‘আমরা এবছরের মধ্যে এটি চালু করতে চাই। এজন্য দুই বন্দরে দুটি করে চারটি ট্রায়াল রান করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
'উল্লেখ্য, করোনাকালে চট্টগ্রাম ও মোংলাবন্দর ব্যবহার সংক্রান্ত একটি ট্রায়াল রান হয়েছিল।'
পানি ইস্যু
-দীর্ঘ ১২ বছরে যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) বৈঠক হয়নি এবং এটি হওয়ার জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেতে অনেকবার তাগাদা দেওয়া হলেও ভারতের পক্ষ থেকে তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি।
-পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব মাশফি বলেন, ‘জেআরসি বৈঠক দ্রুত করার বিষয়ে আমরা তাগাদা দেবো। এছাড়া অন্যান্য নদী নিয়েও আলোচনা হবে।’
জ্বালানি ও পানি সহযোগিতা, মোমেন-জয়শঙ্কর বৈঠকে যেসব ইস্যু গুরুত্ব পাবে
কুশিয়ারা নদীর পানি উত্তোলন এবং রহিমপুর খাল নিয়ে অমীমাংসিত চুক্তি দ্রুত সম্পন্ন করারও তাগিদ থাকবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলে তিনি জানান।
লাইন অব ক্রেডিট
'ভারতের কাছ থেকে লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চায় বাংলাদেশ। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতার কারণে বাস্তবায়নের হার কম।'
-মাশফি বিনতে সামস বলেন, ‘২০১০ সালে প্রথম এলওসি চুক্তি হয়েছে এবং গত ১২ বছরে এটি বাস্তাবয়ন সংক্রান্ত জটিলতাগুলো অনেকাংশে নিরসন করা সম্ভব হয়েছে।’
কিছু সমস্যা রয়ে গেছে, যেমন- গ্রেস পিরিয়ড নির্ণয় এবং এগুলো নিয়ে আরও আলোচনা হবে বলে তিনি জানান।
প্রধানমন্ত্রীর সফর
'চলতি বছরের এপ্রিলে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর দিল্লি সফরের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে গেছেন।'
-জেসিসি বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর সফরের তারিখ নিয়ে আলোচনা হবে কিনা, জানতে চাইলে মাশফি বিনতে সামস বলেন, ‘সম্ভাবনা আছে। ভারতের রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী গত বছর ঢাকা সফর করেছেন। এবার আমাদের যাওয়ার পালা। আমরা সফরের সম্ভাব্য তারিখ নিয়ে আলোচনা করবো।’